১২টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক থেকে সংখ্যা কমিয়ে ৪ বা ৫-এ নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নরেন্দ্র মোদি সরকার নরেন্দ্র মোদি সরকার দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর থেকে ভারতে বেসরকারিকরণের জোর হাওয়া বইছে। টেলিকম, উড়োজাহাজ, বিমা, পেট্রোলিয়াম-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে একের পর এক রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার অংশীদারিত্ব বিক্রি প্রায় চূড়ান্ত। এমনকি রেল, খনি, বিদ্যুৎ, প্রতিরক্ষা এবং কৃষি পণ্য বিপননও বেসরকারি লগ্নিকারীদের জন্য খোলা। দেশ রূপান্তর
এবার সরকারের নজর ব্যাংকিং খাতে। অর্ধেকের বেশি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক বেসরকারিকরণে বিষয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করে দিয়েছে। এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত সরকারি কর্মকর্তা ও ব্যাংকিং সংশ্লিষ্টদের বরাত এ খবর দিয়েছে রয়টার্স। আর খবরটি বাংলা প্রকাশ করেছে কলকাতার এই সময়।
সংবাদ সংস্থাটির প্রতিবেদন অনুসারে, বর্তমানে ভারতে ১২টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক রয়েছে। এই সংখ্যা কমিয়ে ৪ বা ৫-এ নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। ব্যাংকিং শিল্পে সামগ্রিক বদলে সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত অংশ হিসেবেই এই পদক্ষেপ। প্রাথমিক পর্যায়ে ব্যাংক অব ইন্ডিয়া, সেন্ট্রাল ব্যাংক অব ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়ান ওভারসিজ ব্যাংক, ইউকো ব্যাংক, ব্যাংক অব মহারাষ্ট্র এবং পঞ্জাব অ্যান্ড সিন্ধ ব্যাংকের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশিদারিত্ব বিক্রি করে দেওয়ার ভাবনা সরকারের।
শীর্ষ এক কর্মকর্তা বলেন, “সরকার চায় দেশে মাত্র ৪ থেকে ৫টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক থাকুক। কিন্তু আর কোনো ব্যাংক সংযুক্তিকরণ হবে না বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। ফলে বাকি সমস্ত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়াই একমাত্র পথ। বিষয়টি নীতিগত স্তরে এক প্রকার চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে।”
পুরো বিষয়টি বর্তমানে পরিকল্পনার স্তরে আছে। সেটি চূড়ান্ত রূপ পেলে অনুমোদনের জন্য ক্যাবিনেটে পেশ করা হবে। এই বিষয়ে রয়টার্সের তরফে অর্থ মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করা হলেও কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে ভারতীয় অর্থনীতি। এর মধ্যে কয়েক মাসের টানা লকডাউনে সরকারের আয়ের পথ ক্রমশ সংকুচিত হচ্ছে। অন্য দিকে খরচও বাড়ছে। আর্থিক ঘাটতির মাত্রা বেশ আগেই পার করেছে সরকার। চলতি বছর যার পরিমাণ জিডিপি-র ৭ শতাংশে পৌঁছে যেতে পারে বলে অর্থনীতিবিদের একাংশ সমীক্ষায় জানিয়েছিল। এই পূর্বাভাস সত্যি হলে এমন পরিস্থিতি ১৯৯৪ সালে শেষবার দেখা যায়।
এই পরিস্থিতিতে বাজেট ঘাটতি জিডিপির ৩.৫ শতাংশের মধ্যে বেঁধে রাখতে সরকারি সম্পত্তি বিক্রি করে ২.১ লাখ কোটি রুপি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা গত ফেব্রুয়ারি মাসেই নেন মোদি। রাষ্ট্রায়ত্ত এয়ার ইন্ডিয়া ও ভারত পেট্রোলিয়াম বিক্রির জন্য ময়দানেও নামে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি সাময়িকভাবে ওলটপালট করে দিয়েছে সে পরিকল্পনায়।