রাজধানীর গায়ে গা লাগানো গাজীপুর জেলার শ্রীপুরে দ্রুত গড়ে উঠছে নতুন নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠান। ফলে প্রতিনিয়ত বাড়ছে এখানকার জমির দামও। আর এ কারণেই ভূমি সংক্রান্ত বিরোধও বেড়েছে বহুগুণ। বিরোধে জড়িয়ে বা এ ধরনের ঝামেলা এড়াতে শ্রীপুর উপজেলা ও ইউনিয়ন ভূমি অফিসগুলোতে নামজারি, ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ, মিস কেসসহ গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো করতে গিয়ে সাধারণ মানুষ হয়রানির শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। ভূমি সংক্রান্ত কাজ করতে গিয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি), তহশিলদার থেকে শুরু করে পিয়নদের পর্যন্ত ঘুষ দিতে হচ্ছে।
ভূমি অফিসে আসা অধিকাংশ ভুক্তভোগীর মুখে একই কথা- হয়রানি আর ভোগান্তি কী তা এখানে না এলে বোঝা যায় না। অফিস নিয়মে প্রত্যেক ধাপে ঘুষ দিয়েই ফাইল এসিল্যান্ডের টেবিল পর্যন্ত পৌঁছানো হয়। এতে সহযোগিতা করে অফিসের কর্মচারী-দালাল সিন্ডিকেট।
শ্রীপুর উপজেলা ভূমি অফিস এবং সাতটি ইউনিয়ন তহশিল অফিসে মাসে কমপক্ষে কোটি টাকার ঘুষ লেনদেন হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। ফলে ভূমি সংশ্লিষ্ট সেবা নিতে আসা সরকারি এসব অফিসে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ভূমি মালিকদের।
অভিযোগ উঠেছে, সহকারী কমিশনার (ভূমি), কানুনগো, সার্ভেয়ার, তহশিলদার, অফিস সহকারী, পিয়ন-দালাল সবাই ঘুষ বাণিজ্যের সঙ্গে কমবেশি জড়িত। উপজেলা সহকারী ভূমি প্রশাসক (এসিল্যান্ড) মাসুম রেজা যোগদানের পর থেকে প্রতিনিয়তই হয়রানি বেড়ে চলেছে। অবৈধ লেনদেনকে ঘিরে গড়ে উঠেছে শক্তিশালী জালিয়াত চক্র, কর্মচারী-দালাল সিন্ডিকেট। ঘুষ দিয়েই অফিসের অনিয়মকে নিয়মে পরিণত করাসহ এক দাগের জায়গার মালিক অন্যজনকে করে দেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটছে।
গত এক সপ্তাহ ধরে শ্রীপুর উপজেলা ভূমি অফিস ও সাতটি তহশিল অফিস নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয় । এসময় জমির ক্রেতা-বিক্রেতাদের কাছ থেকে ঘুষ, দুর্নীতি আর অনিয়মের বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, নাম প্রস্তাব, সার্ভে রিপোর্ট, নামজারি, ডিসিআর সংগ্রহ, মিস কেস ও খাজনা দাখিল থেকে শুরু করে সব কিছুতেই এখন ঘুষের কারবার। জমির দামের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে শ্রীপুর উপজেলা ভূমি অফিসসহ সাতটি তহশিল অফিসে ঘুষ লেনদেন কার্যক্রম। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কারও তোয়াক্কা না করে বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আসা ভুক্তভোগীদের কাছে অনেকটা প্রকাশ্যেই ঘুষের অংক নির্দিষ্ট করে দিচ্ছেন। বলে দিচ্ছেন, ঘুষ না দিলে ফাইল নড়বে না। ঘুষ ছাড়া কোনও কাজই হচ্ছে না সেখানে।
জমির ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঘুষ নেওয়ার নতুন পন্থাও উদ্ভাবন করেছেন ভূমি কর্মকর্তারা। নামজারির আবেদনপত্র উপজেলা ভূমি অফিসে জমা দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। তবে গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে মাওনা ইউনিয়ন ভূমি অফিসসহ সব অফিসের নামজারির আবেদন উপজেলা ভূমি অফিসে জমা না নিয়ে ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হচ্ছে। তাকে ঘুষ না দিলে আবেদন জমা নেওয়াই হচ্ছে না।
উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের ধনুয়া এলাকার আজহার উদ্দিন তার পৈতৃক সূত্রে পাওয়া ৯ শতাংশ জমির নামজারি করতে গেলে মাওনা ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম আট হাজার টাকা দাবি করেন। টাকা না দেওয়ায় আবেদন জমা নেওয়া হয়নি।
গাজীপুর ইউনিয়নের গাজীপুর গ্রামের ফারুক আহমদ জানান, তিনি তার এক আত্মীয়কে নিয়ে গাজীপুর মৌজায় নিজেদের কেনা ও পৈতৃক জমির নামজারি ও জমাভাগ করার জন্য ১২২৯-১২৩০/১৪-১৫ নথিতে আবেদন করেন। এ কাজটি করতে অফিস খরচের নামে মাওনা ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আক্কাছ আলী এক লাখ টাকা দাবি করেন। কিন্তু, তিনি এতে রাজি না হওয়ায় তার নথি দুটি গায়েব হয়ে যায়। অনেক খোঁজাখুঁজি করে আর নথি দুটির সন্ধান পাওয়া যায়নি। এজন্য আক্কাস আলীকেই দায়ী করেছেন ফারুক আহমেদ।
এ ব্যাপারে মাওনা ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আক্কাছ আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গাজীপুর ইউনিয়নের গাজীপুর গ্রামের ফারুক আহমদের নামজারি ও জমাভাগ করার জন্য ১২২৯-১২৩০/১৪-১৫ নং নথি দুটি গায়েব হওয়ার অভিযোগটি সঠিক নয়। ওই ব্যক্তির কাগজপত্রে গড়মিল থাকায় তার আবেদনটি বাতিল করা হয়েছে। এ বিষয়ে এক লাখ টাকা ঘুষ দাবির অভিযোগটি তিনি অস্বীকার করেন।
তেলিহাটি ইউনিয়নের তেলিহাটি গ্রামের মোহাম্মদ আলী মৃধা অভিযোগ করেন, তার এলাকার ৩৮২,৩৮৩ দাগের সরকারি পুকুর লিজ নিয়ে প্রতি বছর সরকারকে রাজস্ব দিতেন। কিন্তু তেলিহাটি ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা আব্দুল লতিফকে তার চাহিদামতো টাকা না দেওয়ায় তার লিজ নবায়ন করা যাচ্ছে না। এদিকে, ভূমিদস্যুরা সরকারি এই পুকুরটি কর্মকর্তাদের যোগসাজসে অবৈধভাবে দখলের চেষ্টা চালাচ্ছেন।
একই ইউনিয়নের মূলাইদ গ্রামের আফাজ উদ্দিন অভিযোগ করেন, আরএস ১০ দাগের ৩ একরের সরকারি পুকুর রহস্যজনক কারণে প্রায় ১৫ বছর ধরে ইজারা দেওয়া হচ্ছে না। তেলিহাটি ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ ও শহিদুলের যোগসাজসে অধিকাংশ জায়গা বে-দখল হয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ করেও সরকারি ভূমি রক্ষা করা যাচ্ছে না।
শ্রীপুর উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন ও উপজেলা ভূমি অফিসের সমন্বয়ে চলে ভূমি সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম। প্রতি অর্থ বছর ১০ হাজারের ওপর নামজারির নথি সম্পন্ন হয়। ১ একরের কম নথিতে ঘুষের নামে অফিস খরচ নির্দিষ্ট করা আট হাজার টাকা। এরপর নথি অনুমোদনের পর ভূমি উন্নয়ন কর ও ডিসি আর ফি জমা দিতে হয়ে। সব মিলিয়ে ছোট নথিতে ভূমি মালিকের সর্বনিম্ন খরচ হয় ১৫ হাজার টাকা। আর এভাবেই প্রতিবছর হাতিয়ে নেওয়া হয় কোটি কোটি টাকা। যদিও সরকার রাজস্ব পায় ডিসি আর ফি বাবদ ১১৫০ টাকা ও পরিশোধিত ভূমি উন্নয়ন কর।
উপজেলার গাজীপুর গ্রামের সাহারা খাতুন জানান, তার ৭১১/১৫-১৬ নথির মাধ্যমে তাদের তিন বোনের পৈতৃক ১১ শতাংশ জমি নামজারি করতে মাওনা ইউনিয়ন উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আনোয়ারুল হককে দিতে হয়েছে ১২ হাজার টাকা।
উপজেলা ভূমি অফিসসহ সাতটি তহশিল অফিসে রয়েছে দালালদেরও দৌরাত্ম্য। কর্মকর্তাদের নিজস্বভাবে নিয়োগ করা উমেদাররা (দালাল) নিয়ন্ত্রণ করেন ভূমি সংক্রান্ত কার্যক্রমসহ টাকা লেনদেন। ভূমি অফিসগুলোতে উমেদাররা চেয়ার টেবিল নিয়ে বসে গুরুত্বপূর্ণ রেকর্ডপত্র (দলিল) নিয়ে কাজ করেন। ফলে অরক্ষিত হয়ে পড়েছে সরকারি দলিলপত্র।
তেলিহাটি ইউনিয়নের সাইটালিয়া গ্রামের নূর মোহাম্মদ অভিযোগ করেন, তার ছেলে ও মেয়ের নামে ৩৩ শতাংশ জমি নামজারি করতে আবেদন জমা দেওয়ার পর সংশ্লিষ্ট ভূমি কর্মকর্তা শহিদুলের ব্যক্তিগত কর্মচারী পরিচয় দিয়ে তাজাম্মুল নামে এক লোক ফোন করে ১০ হাজার টাকা নিয়ে অফিসে যোগাযোগ করতে বলেন। এই টাকা দিতে বাধ্য হওয়ার পর তার ৮৩৮/১৫-১৬ নথি অনুমোদিত হয়। নূর মোহাম্মদসহ ভূমি অফিসে আসা অধিকাংশ ভুক্তভোগীর মুখে একই কথা- হয়রানি আর ভোগান্তি কী তা এখানে না এলে বোঝা যায় না। অফিস নিয়মে প্রত্যেক ধাপে ঘুষ দিয়েই ফাইল এসিল্যান্ডের টেবিল পর্যন্ত পৌঁছানো হয়। এতে সহযোগিতা করে অফিসের কর্মচারী-দালাল সিন্ডিকেট।
মাওনা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে ভূমি কর্মকর্তার নিয়োগকৃত উমেদার জহির, জাহাঙ্গীর, আলাল, মাহাবুব ভূমি মালিকদের ফোন করে করে টাকা আদায় করেন। কোনও মালিক সরাসরি ভূমি কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে ভূমি কর্মকর্তা তার নিজস্ব কর্মচারীদের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেন।
শ্রীপুর পৌর ভূমি অফিসে ভূমি কর্মকর্তার নিয়োগকৃত উমেদার রাকিব, আজিজুল, রনিসহ আরও কয়েকজন ভূমি মালিকদের সঙ্গে মধ্যস্থতায় ব্যস্ত থাকেন। এছাড়াও শ্রীপুর উপজেলার ভূমি অফিসে নামজারি সহকারী আলমগীরের নিয়োগকৃত উমেদার নিজামউদ্দিন, আবুল বাশারের নিয়োগকৃত উমেদার সাইফুল ইসলাম ও জহিরুল ইসলাম সাধারণ ভূমি মালিকদের সঙ্গে মধ্যস্থতায় ব্যস্ত থাকেন।
রাজস্ব আদায়ের নামে নিজের পকেট ভারি করার কাজে ব্যস্ত থাকেন ভূমি কর্মকর্তারা। মূলাইদ গ্রামের আফতাব উদ্দিন অভিযোগ করেন, তার জমির ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করতে গেলে উপ-সহকারী কর্মকর্তা শহিদুল হক তার কাছে সাত হাজার টাকা দাবি করেন। অবশেষে ছয় হাজার টাকা দিলে তার হাতে ধরিয়ে দেন ১৬৭০ টাকার রশিদ। এভাবেই ভূমি উন্নয়ন করের কোনও চার্ট বা তালিকা জনগণকে অবহিত না করায় যাচ্ছেতাই ভাবে ভূমি উন্নয়ন কর আদায় করছেন ভূমি কর্মকর্তারা।
এদিকে, নামজারিতে ঘুষ বাবদ অতিরিক্ত অর্থ খরচ হওয়ায় ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধে উৎসাহ হারাচ্ছেন ভূমি মালিকরা। জমিতে মালিকানাসংক্রান্ত ঝামেলা, দখল না থাকলে অফিস খরচ লাখ টাকার ওপর ছাড়িয়ে যায়। টাকা দিলে সবকিছু সম্ভব সরকারি ওইসব ভূমি অফিসগুলোতে।
শ্রীপুর ভূমি অফিসে প্রতি মাসে কম করে হলেও এক হাজার মিউটেশন (নামজারি) হয়। এ কাজে ডিসিআর (ডুপ্লিকেট কার্বন রশিদ) বাবদ এক হাজার ১৫০ টাকা ফি আদায়ের বিধান থাকলেও খরচ হয় পাঁচ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত। কেবল এ বাবদই এসিল্যান্ড থেকে শুরু করে পিয়ন পর্যন্ত হাতিয়ে নেয় ৮০ লাখ থেকে এক কোটি টাকা। কম ঘুষ দিলে বেশি ঘোরাঘুরি, আর ঘুষের পরিমাণ বেশি দিলে কাজ হয় তাড়াতাড়ি। ঘুষ দেওয়ার পরও সরকারের বেঁধে দেওয়া ৪৫ দিনের মধ্যে কাজ শেষ করার রেকর্ড নেই বললেই চলে।
প্রেষণেইচলছেবছরেরপরবছর
মাওনা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে দীর্ঘ ১৭ বছর যাবত কর্মরত উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আনোয়ারুল হক। যদিও তার কর্মস্থল কাওরাইদ ভূমি অফিসে। উমেদার থেকে সরকারি কর্মচারী, অফিস সহায়ক, পরে উপ-সহকারী কর্মকর্তা হিসাবে উন্নীত হলেও তার চাকরির স্থান পরিবর্তন হয়নি।
মাওনা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আনোয়ারুল হকের কাছে একই কর্মস্থলে কি করে ১৭ বছর ধরে চাকরি করছেন তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার কর্মস্থল কাওরাইদ ভূমি অফিসে। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্দেশে আমি প্রেষণে মাওনা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে দায়িত্ব পালন করছি।’ ১৭ বছরে অনেক জেলা প্রশাসক ও ভূমি কর্মকর্তা গাজীপুরে এলো-গেলো কিন্তু তিনি রয়ে গেলেন কি করে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি তথ্য প্রকাশ না করার ইঙ্গিত করে রবিবার সকাল ৯ টায় মাওনা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে তার সঙ্গে চা পানের অনুরোধ করেন এ প্রতিবেদককে।
একইভাবে কর্মস্থল কাওরাইদ অফিসে থাকলেও অফিস সহকারী জায়েদা খাতুন ১১ বছর যাবত তেলিহাটি ভূমি অফিসে, গাজীপুর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) অফিসের অফিস সহকারী হিসেবে কামাল হোসেন কাজ করেন তেলিহাটি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে। এক যুগ ধরে অফিস সহায়ক সিরাজুল হক শ্রীপুর পৌর ভূমি অফিসে কাজ করছেন। অন্যান্য ভূমি অফিসে অফিস সহায়ক পদে জনবল সঙ্কট থাকলেও তেলিহাটি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে কর্মরত আছেন ৯ জন অফিস সহায়ক। এদের মধ্যে তিনজন পোস্টিং এবং ডেপুটেশনে (প্রেষণে) ছয়জন কর্মরত আছেন। এছাড়াও তেলিহাটি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে উপ-সহকারী কর্মকর্তা শহিদুল হক সাত বছর যাবত কর্মরত আছেন একই অফিসে।
এ বিষয়ে জানতে অফিস সহকারী জায়েদা খাতুনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে একই জায়গায় দায়িত্ব পালন করায় ভূমি অফিসের এসব সহকারী ও কর্মচারীদের দাপট অত্যন্ত বেশি। ঘুষ বাণিজ্য, দালাল নিয়ন্ত্রণ, অফিস খরচ এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষার ক্ষেত্রে এসব মধ্যম ও নিম্নস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকেন।
এদিকে, এ সব অভিযোগের ব্যাপারে প্রশাসনের নজরদারির কি রকম তা জানতে চাইলে পুরোপুরি চোখ উল্টে নেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাসুম রেজা। তিনি সোজাসুজি দাবি করে বসেন, ‘ভূমি অফিসে কোনও ধরনের ঘুষ বাণিজ্য নেই। তবে নিজেদের গায়ে লাগা অভিযোগ ঝেড়ে ফেললেও রাষ্ট্রের আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে তার কূটনৈতিক উত্তর, কোনও কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যদি লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে তদন্ত করে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলাসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
এমনকি ভূমি ও তহশিল অফিসের ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগগুলো কানে তুলতে চাননি শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানও। তিনি এই প্রতিনিধিকে বলেন, ‘আপনার এই লেখাতে আমার এসিল্যান্ডের কি চাকরি চলে যাবে?’ পরে বলেন, ‘আপনাকে ভালবাসি বলে কথাটা বললাম। আমার অফিসে চায়ের দাওয়াত রইলো আপনার।’