বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের পূজা মণ্ডপে এবং মন্দিরে হামলার ঘটনা উদ্দেশ্যমূলক এবং কারো ইন্ধনে হয়েছে বলে সন্দেহ করছেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।তিনি বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার জন্য দেশের বাইরে কেউ কলকাঠি নাড়ছে কিনা সেটাও তদন্ত করে দেখা হবে।রোববার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মি. খান সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন “অনেক কিছুই দেখেছি, অনেক কিছুই অনুমান করছি। এগুলি আমরা প্রমাণের অপেক্ষায় আছি। আমরা প্রমাণ পেলেই আপনাদের সম্মুখে তুলে ধরবো।”চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে এবং নোয়াখালিতে যারা নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন তাদের জন্য তিনি দুঃখপ্রকাশ করেন।মি. খান বলেন, হাজীগঞ্জের পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশকে বেগ পেতে হয়েছে। এতে চারজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আপনাদের কাছে এটুকুই আমরা বলতে চাই আপনাদের কাছে যদি কোন তথ্য থাকে আমাদের জানাবেন।”আমরা সুনিশ্চিত এটা উদ্দেশ্য প্রণোদিত। একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার জন্য, আমাদের একটা সম্প্রীতির দেশ সেটা বিনষ্ট করার জন্য এই ঘটনা ঘটিয়েছে। আমি পূর্বেই বলেছি আমাদের দেশের মানুষ ধর্মভীরু কিন্তু ধর্মান্ধ নয়।”হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দূর্গাপূজায় এবারে অষ্টমীর দিন কুমিল্লায় একটি পূজামণ্ডপে কোরআন পাওয়ার পর দেশের বিভিন্ন জেলায় মন্দিরে এবং পূজা মণ্ডপে হামলা হয়।নবমীর দিন বাংলাদেশ হিন্দু বৈদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ এবং পূজা উৎযাপন কমিটির নেতাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর ভার্চুয়াল বৈঠক হয়।
হিন্দু নেতারা নবমীর দিন পূজা বন্ধ করে দেয়ার পরিকল্পনা করলেও প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসে তারা পূজার আনুষ্ঠানিকতা চালিয়ে যান।কিন্তু শুক্রবার প্রতিমা বিসর্জনের দিন দেশের বিভিন্ন স্থানে পূজা মণ্ডপ এবং মন্দিরে হামলা হয়। গতকাল শনিবারেও ফেনীতে সংঘর্ষ হয়েছে।স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমরা মনে করি কাজটা যে করেছেন উদ্দেশ্যমূলক ভাবে করেছেন, যে করেছেন কারো ইন্ধনে করেছেন। যে করেছেন সে একটা স্থিতিশীল পরিস্থিতি বিনষ্ট করার জন্য করেছেন।”আমরা সব কিছু তদন্তের মাধ্যমে উৎঘাটন করে একটা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা অবশ্যই করবো। যাতে করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার প্রয়াস যেন কেউ না পায়।”
এই ঘটনার সঙ্গে দেশের বাইরের কোন ইন্ধন আছে কিনা-সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মি. খান বলেন “আমাদের দেশের লোকেরই তো অভাব নেই। তবে দেশের বাইরে কেউ কলকাঠি নাড়ছে কিনা সেগুলোও আমাদের তদন্তে বের হয়ে আসবে”।বুধবার কুমিল্লায় একটি পূজামণ্ডপে কোরআন পাওয়ার পর ওই ঘটনার জের ধরে কুমিল্লা, চাঁদপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মন্দির ও পূজামণ্ডপে হামলার ঘটনা ও সহিংসতায় ছয়জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।