কক্সবাজারের উখিয়ায় কুতুপালং ক্যাম্পের ভেতরে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের গুলিতে রোহিঙ্গাদের একজন শীর্ষ নেতা মুহিবুল্লাহ মারা গেছেন।ক্যাম্পের দায়িত্বে থাকা আর্মড পুলিশ ব্যাটলিয়ন ১৪’এর কমান্ডিং অফিসার পুলিশ সুপার নাইমুল হক এই তথ্য নিশ্চিত করেন।মুহিবুল্লাহর স্ত্রী’র বরাত দিয়ে মি. হক জানান, বুধবার রাত সাড়ে আটটার দিকে কুতুপালং শিবিরে তার বাড়িতে চার-পাঁচজন লোক এসেছিলেন।মি. মুহিবুল্লাহকে চার-পাঁচ রাউন্ড গুলি করা হয় বলে তার স্ত্রী’র বরাত দিয়ে মি. নাইমুল হক জানান।
৪৭ বছর বয়সী মি. মুহিবুল্লাহর হত্যাকাণ্ডের পর গতকাল রাত পর্যন্ত ক্যাম্পে তার অনুসারীরা অবস্থান নিয়েছিলেন বলে জানান মি. হক।”রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অল্প জায়গার মধ্যে অনেক মানুষ থাকে। তাই গোলাগুলি ও হত্যার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর গতকাল রাতেই আশেপাশ থেকে বহু মানুষ ঘটনাস্থলে ভিড় জমায়।”পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয় এবং রাতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে।বৃহস্পতিবার সকালে বিবিসি বাংলাকে ওই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, “সকালে আবারো কিছু উৎসুক মানুষকে ঘটনাস্থলে জড়ো হতে দেখা যায়। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।”ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
মি. মুহিবুল্লাহর হত্যাকাণ্ডের সাথে তার পরিচিত ব্যক্তিরা জড়িত বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ।”যেহেতু হত্যাকারীরা তার কাছে যেতে পেরেছিলেন এবং তার সাথে দেখা করতে পেরেছিলেন, তারা তার পরিচিত ব্যক্তি ছিলেন বলেই প্রাথমিকভাবে আমাদের মনে হচ্ছে,” বলেছেন আর্মড পুলিশ ব্যাটলিয়ন ১৪’এর কমান্ডিং অফিসার পুলিশ সুপার নাইমুল হক।মি. মুহিবুল্লাহর সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক উচ্ছেদ হওয়া রোহিঙ্গাদের অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করতো।সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের খবর অনুযায়ী, শরণার্থী শিবিরে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর দাবি-দাওয়া তুলে ধরার প্রচেষ্টায় কাজ করতো মি. মুহিবুল্লাহর সংগঠন।২০১৯ সালে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে বক্তব্য রাখার জন্য আমন্ত্রিত হয়েছিলেন তিনি। সেসময় সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে সাক্ষাতের জন্য হোয়াইট হাউজেও আমন্ত্রিত ছিলেন তিনি।