শুক্রবার, ৩১ মার্চ ২০২৩, ০৬:৪৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
বাংলাদেশের প্রথম Smart Village প্রবেশ গেইট এর শুভ উদ্বোধন জাতীয় বীমা দিবসে লক্ষ্মীপুর মার্কেন্টাইল ইসলামী লাইফের মৃত্যুদাবীর চেক প্রদান পবিত্র শবে বরাত ৭ মার্চ করোনাভাইরাস পরিস্থিতি ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত প্রায় এক লাখ, মৃত্যু পৌনে চারশো নিজের নয়, দেশের মানুষের ভাগ্য গড়তে এসেছি: প্রধানমন্ত্রী মিরপুরবাসীর দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান পাখির স্বপ্ন পূরণে পাশে দাঁড়ালেন জেলা প্রশাসক হতাশা ও টাকার জন্য নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেছেন ফারদিন গুজবে কান না দেওয়ার পরামর্শ প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্মীপুর ইউসিসিএল’র সভাপতি ও বিআরডিবি’র কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

সাবধান ! ১৫ প্রজাতির দেশি মাছের পেটে পাওয়া যাচ্ছে প্লাস্টিকের কণা

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ১৮ আগস্ট, ২০২১
  • ২০৪ Time View

মাছে ভাতে বাঙালি- একটি বহুল প্রচলিত প্রবাদ। মাছ ছাড়া যেন আমাদের এক বেলার আহারও হয় না। কিন্তু এই মাছ নিয়েই একটি দুঃসংবাদ পাওয়া গেছে- বাংলাদেশে সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে ৭৩ শতাংশ মাছে রয়েছে মাইক্রোপ্লাস্টিক বা প্লাস্টিকের কণা যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে উঠতে পারে।দেশি মাছের ওপর এই গবেষণাটি চালিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ। বাজারে পাওয়া যায় এমন দেশি মাছের ওপর গবেষণা করে জানা যায় যে ১৫ প্রজাতির মাছে প্লাস্টিকের এই ক্ষুদ্র কণার উপস্থিতি রয়েছে।যেসব প্লাস্টিক পলিমার পাওয়া গেছে তার মধ্যে রয়েছে হাই ডেনসিটি পলিথিলিন, পলিপ্রোপাইলিন-পলিথিলিন কপোলাইমার এবং ইথিলিন ভিনাইল এসিটেট।এই গবেষণা রিপোর্টটি সম্প্রতি পরিবেশ বিষয়ক আন্তর্জাতিক জর্নাল সায়েন্স অব দ্য টোটাল এনভায়রনমেন্টে প্রকাশিত হয়েছে।

কোন কোন মাছে প্লাস্টিক

এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক শফি মুহম্মদ তারেক, সহযোগী অধ্যাপক ফাহমিদা পারভীন এবং শিক্ষার্থী সুমাইয়া জান্নাত।ফাহমিদা পারভীন জানান, ১৫ প্রজাতির মাছের পরিপাকতন্ত্রে তারা প্লাস্টিকের ক্ষুদ্র কণার সন্ধান পেয়েছেন।”আমরা মোট ১৮ প্রজাতির ৪৮টি মাছ নিয়ে পরীক্ষা করি। তার মধ্যে ৩৭টি মাছে অর্থাৎ ৭৩ শতাংশ মাছেই মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে।”যেসব মাছের পেটে মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে তার মধ্যে রয়েছে রুই, তেলাপিয়া, কই, কালিবাউশ, বেলে, টেংরা, কমন কার্প, পাবদা, পুঁটি, শিং, টাটকিনি, বাইন, বাটা, মেনি ও বাছা।

তার মধ্যে টেংরা, টাটকিনি ও মেনি মাছে বেশি পরিমাণে মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে।ঢাকার কাছে সাভার ও আশুলিয়ার দুটো স্থানীয় বাজার থেকে এসব মাছ কেনা হয়েছে যা দেশের নদী নালা, খাল বিল, পুকুর ও জলাশয়ের স্বাদু পানিতে পাওয়া যায়।”সাভারের বাজারে যেসব মাছ পাওয়া যায় সেগুলো সাধারণত বুড়িগঙ্গা, তুরাগ নদী কিম্বা আশেপাশের খাল থেকে ধরা হয়,” বলেন তিনি।গবেষকরা বলছেন, শুধু বড় মাছেই নয়, ছোট ছোট মাছেও যে প্লাস্টিকের কণা রয়েছে এই গবেষণা থেকে সেটা প্রমাণিত হয়েছে।এছাড়াও দেখা গেছে যেসব মাছ পানির সবচেয়ে নিচের স্তরে বাস করে, তাদের মধ্যে মাইক্রোপ্লাস্টিকের উপস্থিতি বেশি।এর কারণ হিসেবে ফাহমিদা পারভীন বলেন, “একেক মাছ পানির একেক স্তরে বাস করে। মাইক্রোপ্লাস্টিকগুলো তাদের ভরের কারণে ধীরে ধীরে নিচের তলানিতে গিয়ে জমা হয়। ফলে পানির নিচের স্তরের মাছগুলো তলানিতে পড়ে থাকা প্লাস্টিকের কণাগুলো খায়।”

মাছের পেটে গেল কীভাবে

মাইক্রোপ্লাস্টিক হচ্ছে প্লাস্টিকের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কণা। আকারে এটি সর্বোচ্চ পাঁচ মিলিমিটার পর্যন্ত বড় হতে পারে।বিজ্ঞানীরা বলছেন, বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিক বর্জ্য পানিতে ফেলে দিলে সেসব ফটোকেমিক্যালি ও বায়োলজিক্যালি ভেঙে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণায় পরিণত হয়।”এছাড়াও আমরা বিভিন্ন ধরনের ভোগ্যপণ্য ব্যবহার করি, যেমন টুথপেস্ট, ফেসওয়াশ, যেগুলোতে ছোট ছোট বীজ থাকে। এগুলো আসলে মাইক্রোপ্লাস্টিক বা প্লাস্টিকের বীজ। এগুলো পানিতে চলে যায় এবং মাছ এগুলোকে খাবারের সাথে ভুল করে খেয়ে ফেলে। এভাবে মাছের শরীরে প্লাস্টিকটা চলে যায়,” বলেন অধ্যাপক পারভীন।

মানুষের দেহে আসার সম্ভাবনা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় মাছের পরিপাকতন্ত্রে মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গেলেও বিজ্ঞানীরা বলছেন, মাছের দেহেও এসব প্লাস্টিক চলে আসার প্রমাণ পাওয়া গেছে।ফাহমিদা পারভীন বলছেন, “বাইরের আরো অনেক দেশে উন্নত ধরনের কিছু গবেষণা হয়েছে যাতে দেখা গেছে যে মাছের পেশী, চামড়া, মাংস ও লিভারেও প্লাস্টিক রয়েছে।”অর্থাৎ মাছ খেলে প্লাস্টিকের ক্ষুদ্র কণা মানুষের দেহেও চলে আসবে।

কী ক্ষতি হয়

মাছ ও মানুষ উভয়ের জন্যই ক্ষতিকর এসব মাইক্রোপ্লাস্টিক।বিজ্ঞানীরা বলছেন, বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে প্লাস্টিকের ক্ষুদ্র কণা যখন মাছের পেটে চলে যায়, তখন তাদের মধ্যেও এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে।”মাছ যখন মাইক্রোপ্লাস্টিক খেয়ে ফেলছে তখন তাদের মধ্যে ক্ষুধামন্দা ও ঝিমুনি দেখা যায়,” বলেন ফাহমিদা পারভীন।বাংলাদেশে পলিথিনের যেসব ব্যাগ ব্যবহার করা হয় তার মধ্যে প্লাস্টিকের পলিমার ছাড়াও থাকে নানা ধরনের রাসায়নিক পদার্থ – বিসফেনল-এ, থেলেট, থেলেট এস্টার, পলিভিনাইল ক্লোরাইড ইত্যাদি। প্লাস্টিককে নমনীয় করার জন্য এসব যোগ করা হয়।এসব বিষাক্ত পদার্থ মানুষের জন্য ক্ষতিকর।”প্লাস্টিকের কণা যদি মানুষের শরীরে না-ও যায়, ওই প্লাস্টিক থেকে যেসব বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ নিঃসৃত হচ্ছে, সেগুলো মাছের দেহে জমা হয়। এসব বিষাক্ত রাসায়নিক মানুষের শরীরে যাচ্ছে এবং এর ফলে স্তন ক্যান্সারসহ নানা ধরনের অসুখ হতে পারে,” বলেন গবেষক ফাহমিদা পারভীন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2015 teamreportbd
কারিগরি সহযোগিতায়: Freelancer Zone
freelancerzone