মঙ্গলবার, ২১ মার্চ ২০২৩, ১১:৩২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
বাংলাদেশের প্রথম Smart Village প্রবেশ গেইট এর শুভ উদ্বোধন জাতীয় বীমা দিবসে লক্ষ্মীপুর মার্কেন্টাইল ইসলামী লাইফের মৃত্যুদাবীর চেক প্রদান পবিত্র শবে বরাত ৭ মার্চ করোনাভাইরাস পরিস্থিতি ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত প্রায় এক লাখ, মৃত্যু পৌনে চারশো নিজের নয়, দেশের মানুষের ভাগ্য গড়তে এসেছি: প্রধানমন্ত্রী মিরপুরবাসীর দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান পাখির স্বপ্ন পূরণে পাশে দাঁড়ালেন জেলা প্রশাসক হতাশা ও টাকার জন্য নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেছেন ফারদিন গুজবে কান না দেওয়ার পরামর্শ প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্মীপুর ইউসিসিএল’র সভাপতি ও বিআরডিবি’র কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

চাঁপাইনবাবগঞ্জে সংক্রমণ কমে আসার কয়েকটি কারণ

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ৯ আগস্ট, ২০২১
  • ২২০ Time View
GETTY IMAGES

মে মাসের শুরুর দিকে বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমের জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ করোনাভাইরাস সংক্রমণের কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল।সেসময় হঠাৎ করে জেলাটিতে নমুনা পরীক্ষার অনুপাতে সংক্রমণের হার উঠেছিল ৬০ শতাংশের বেশি।ভারতে প্রথম শনাক্ত করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ডেল্টা ভেরিয়েন্টের কারণে এমন ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ হয়েছিল বলে ধারনা করা হয়। চাঁপাইনবাবগঞ্জের তিন দিকেই ভারতের সাথে সীমান্ত।ধারণা করা হয়, বাংলাদেশের দ্বিতীয় ঢেউ-এর শুরুটা দেশের ওই অঞ্চল থেকে।তবে এখন দেশব্যাপী প্রতিদিন সংক্রমণ ও মৃত্যুর নতুন রেকর্ডের মাঝেই চাঁপাইনবাবগঞ্জের পরিস্থিতি বদলে গেছে।

সংক্রমণ যেমন ছিল

চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিভিল সার্জন ডাঃ জাহিদ নজরুল চৌধুরী বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম রোগী শনাক্ত হয় গত বছরের ২০শে এপ্রিল।সেই সময় থেকে এই বছরের এপ্রিল মাস পর্যন্ত, এক বছরে ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছিল।কিন্তু এ বছরের মে মাসের শেষের দিক থেকে জুলাই পর্যন্ত শুধু দুই মাসে চাঁপাইনবাবগঞ্জে দেড়শ জন মারা গেছেন।চাঁপাইনবাবগঞ্জের অনেক বাসিন্দা রাজশাহীতে চিকিৎসা নিতে গিয়ে মারা গেছেন। সেটি এই হিসেবের মধ্যে আছে কিনা তা অবশ্য পরিষ্কার নয়।ডাঃ চৌধুরী বলছেন, এই রমজানের আগ পর্যন্ত চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার নমুনা পরীক্ষার অনুপাতে পাঁচ শতাংশের মতো ছিল।

কিন্তু ঈদের সাত দিনের মধ্যেই জেলাটিতে হঠাৎ করে সংক্রমণ বাড়তে থাকে এবং এক পর্যায়ে তা ৬২ শতাংশেরও উপরে উঠে যায়।চাঁপাইনবাবগঞ্জে সংক্রমণ আকস্মিকভাবে বহুগুণ বেড়ে যাওয়ায় সীমান্তের অন্য জেলাতেও তা ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি তৈরি হয় এবং তার পরপরই সীমান্তবর্তী অন্য জেলাগুলোতেও সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী হতে দেখা যায়।এবছরের মে মাসের ২০ তারিখের দিক থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী হতে থাকে।সেসময় সারাদেশে যখন করোনাভাইরাসের সংক্রমণের হার ছিল গড়ে দশ শতাংশের মতো, তখন চাঁপাইনবাবগঞ্জে সংক্রমণের হার ৫০ শতাংশে উঠে যায়।মে মাসের শেষ সপ্তাহে প্রায় প্রতিদিনই ৬০ শতাংশের মতো ছিল শনাক্তের হার।

এখন যা পরিস্থিতি

ডাঃ জাহিদ নজরুল চৌধুরী জানিয়েছেন, জুলাই মাসে গড় সংক্রমণ নেমে আসে ১৩ শতাংশে। জাতীয় পর্যায়ে এই হার প্রায় ২৯ শতাংশ।স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী আগস্টের শুরু থেকে সাত দিনে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৩ জন মারা গেছেন।এই সাত দিনে মোট শনাক্ত ২০০ জনের মতো। গতকাল ৭ ই আগস্ট নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছেন ১৮ জন। সেই তুলনায় রাজশাহী ও বগুড়া জেলায় শনাক্ত ও মৃত্যুর হার বেশি।

যেসব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভাইরলজি বিভাগের প্রধান ডাঃ সাবেরা গুলনাহার বলছেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণের সময় তাদের হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা বেশিরভাগ রোগী ছিল চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আসা।কিন্তু এখন চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে তেমন রোগী আসছেন না।তিনি বলছেন, “যেকোনো এলাকােই ভাইরাসের সংক্রমণ হলে তার প্রবণতাই হল একটি পর্যায়ের পর নিজেই কমতে থাকে। ধরুন করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের সুস্থ হতে সাধারণত ১৪ দিন লাগে। এরপর নতুন করে আবার সংক্রমিত হয়ে অনেকে আসবেন। এভাবে হিসেব করলে চাঁপাইনবাবগঞ্জে বহু মানুষের ইতিমধ্যেই সংক্রমণ হয়ে গেছে। তাই এখন সংখ্যাটি কম।”

তবে তিনি বলছেন, “একদম গ্রাম পর্যায়ের মানুষজনের মধ্যে জ্বর, সর্দি, কাশির জন্য পরীক্ষা করাতে যাওয়ার হার কম। তারা হয়ত পরীক্ষার আওতার বাইরে রয়ে যাচ্ছে। এছাড়া লকডাউনের একটা বিষয়তো রয়েছেই।”বাংলাদেশে দ্বিতীয় দফায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ার পর চাঁপাইনবাবগঞ্জ ছিল দেশের প্রথম জেলা যেখানে লকডাউন দেয়া হয়।২৫ শে মে থেকে ৭ ই জুন পর্যন্ত জেলাটিতে দুই দফায় সাতদিন করে লকডাউন দেয়া হয়েছিল।

যেটিকে বলা হয়েছিল সর্বাত্মক লকডাউন। দেশের অন্য অঞ্চল থেকে জেলাটিকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়েছিল।দোকানপাট বন্ধ রাখা এবং মানুষজনের বাইরে বের হওয়া বন্ধ করতে সেখানে ২০টির মতো ভ্রাম্যমাণ আদালত কাজ করেছে।সিভিল সার্জন ডাঃ চৌধুরী বলছেন, “হঠাৎ করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ অনেক বেশি মৃত্যু বেড়ে যাওয়ায় অনেকেই ভয় পেয়ে যায়। এটাও একটা কারণ যে তারা সাবধান হয়েছে এটা আমরা লক্ষ করেছি।”সীমান্তে শুরুতে ভারত থেকে আসা ব্যক্তিদের পরীক্ষার ব্যাপারে ততটা গুরুত্ব না দেয়া হলেও সংক্রমণ অনেক বেড়ে গেলে পরে অ্যান্টিজেন পরীক্ষা বাড়ানো হয়েছিল। সীমান্তগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়।তবে করোনাভাইরাস যেহেতু প্রতিনিয়তই তার ধরন বদলাচ্ছে তাতে নতুন করে আবারো সংক্রমণ বাড়বে না, তেমন কথা বলা যায় না।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2015 teamreportbd
কারিগরি সহযোগিতায়: Freelancer Zone
freelancerzone