শুক্রবার, ৩১ মার্চ ২০২৩, ০৫:২৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
বাংলাদেশের প্রথম Smart Village প্রবেশ গেইট এর শুভ উদ্বোধন জাতীয় বীমা দিবসে লক্ষ্মীপুর মার্কেন্টাইল ইসলামী লাইফের মৃত্যুদাবীর চেক প্রদান পবিত্র শবে বরাত ৭ মার্চ করোনাভাইরাস পরিস্থিতি ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত প্রায় এক লাখ, মৃত্যু পৌনে চারশো নিজের নয়, দেশের মানুষের ভাগ্য গড়তে এসেছি: প্রধানমন্ত্রী মিরপুরবাসীর দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান পাখির স্বপ্ন পূরণে পাশে দাঁড়ালেন জেলা প্রশাসক হতাশা ও টাকার জন্য নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেছেন ফারদিন গুজবে কান না দেওয়ার পরামর্শ প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্মীপুর ইউসিসিএল’র সভাপতি ও বিআরডিবি’র কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

শ্রমিকদের ঢাকায় ফেরার পরিস্থিতির জন্য সরকার প্রস্তুত ছিল না

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ২ আগস্ট, ২০২১
  • ১৬৯ Time View
GETTY IMAGES

বাংলাদেশে সরকারের একজন মন্ত্রী বলেছেন, ঢাকার বাইরে থেকে হাজার হাজার শ্রমিক রাজধানীতে ফেরার কারণে যে পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে তার জন্য সরকার প্রস্তুত ছিল না।জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, বিভিন্ন কারণে এই পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে: যার মধ্যে একটি হচ্ছে শ্রমিকরা চাকরি চলে যাওয়ার ভয়ে হয়তো রাজধানীমুখী হয়েছে, অথবা যেসব কারখানা শীর্ষ স্থানে নেই তারা হয়তো তাদের সংগঠনের শর্ত মানে নি, যে কারণে তারা শ্রমিকদের চলে আসার নির্দেশ দিয়েছে।তিনি বলেন, “…তারা আসা শুরু করলে একটা পরিস্থিতির তৈরি হয়, যার জন্য সরকার প্রস্তুত ছিল না, অথবা তারা দায়িত্বশীলভাবে এটা করবে, সেটাই আমাদের ধারণা ছিল।”

করোনাভাইরাস মহামারির কারণে জারি করা কঠোর বিধি-নিষেধের মধ্যেও শুক্রবার শর্ত সাপেক্ষে রপ্তানিমুখী শিল্প-কারখানা রোববার থেকে খুলে দেয়ার কথা ঘোষণা করে সরকার। এর পর পরই রাজধানীতে ফিরতে থাকে হাজার হাজার শ্রমিক।শনিবার মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া এবং মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ফেরিঘাটে হাজার হাজার মানুষকে নদী পার হতে দেখা গেছে। যানবাহন পরিবর্তন করে, পণ্যবাহী যানের ছাদে ওঠে বা হেঁটে তাদের ঢাকার পথে রওনা দিতে দেখা গেছে।

তাদের এমন ভোগান্তি কমাতে শনিবার সন্ধ্যার পর আরেক ঘোষণায় বলা হয় যে, রাত আটটা থেকে পরের দিন রবিবার বেলা ১২টা পর্যন্ত গণপরিবহন চলবে।কারখানা খোলার শর্তে সরকার বলেছিল যে, শুধু ঢাকা এবং এর আশেপাশে থাকা শ্রমিকদের নিয়ে সীমিত পরিসরে কারখানা খোলা যাবে।এ বিষয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, “তাদেরকে (তৈরি পোশাক কারখানার মালিক) সরকার খুব স্পষ্টভাবে বলে দিয়েছিল যে তারা কী করবে, কিন্তু তারা ফেল করেছে।””বিজিএমইএ এবং বিকেএমইএ যে তারা তাদের কমিটমেন্টে ফেল করলো, সেটা কী কী কারণে হলো, সেটা তারাও দেখবে আমরাও দেখবো,” বলেন মি. হোসেন।

‘তোমাগো উপস্থিত থাকতেই হবে’

যেসব পোশাক শ্রমিক ঢাকায় ফিরছেন তাদের বেশিরভাগই জানিয়েছেন যে, ২রা অগাস্ট অফিসে উপস্থিত থাকার নির্দেশ পেয়েই তারা ফিরেছেন। পথে এর জন্য নানা ধরনের ভোগান্তিও পোহাতে হয়েছে তাদের।এমনই একজন ওয়াজেদা বেগম। রবিবার সকালে দিনাজপুর থেকে ঢাকার গাবতলিতে এসে পৌঁছান তিনি। সাথে তার আরো দুই ভাইবোন এবং এক সন্তান। বৃষ্টির মধ্যেই রাস্তায় দাঁড়িয়ে যানবাহন খুঁজতে থাকা ওয়াজেদা বেগম পথের নানা ভোগান্তির চিত্র তুলে ধরেন।তিনি বলেন, “অফিস থেকে ফোন দিয়ে বলছে, প্রথমে বলছিল ৫ তারিখ পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। পরে আবার বলছে দুই তারিখ আসতেই হবে। এজন্যই অনেক কষ্ট করে আসলাম।”

“ডাবল ভাড়া দিয়ে আসলাম, দুই টাকার ভাড়া ১০ টাকা। এখান থেকে চিটাগাং রোডের ভাড়া ২০০-২৫০, এখন চাইতেছে ৮০০-১০০০, এজন্যই দাঁড়ায় আছি,” বলেন ওয়াজেদা বেগম।নারায়ণগঞ্জে আদমজী ইপিজেড এলাকার একটি তৈরি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন সাবিনা ইয়াসমিন। তিনিও ফিরেছেন দিনাজপুর থেকে।

তিনি জানান, অফিসে কড়াকড়ি থাকায় চাকরি হারানোর ভয়েই কাজে যোগ দিতে ঢাকায় ফিরেছেন তিনি।তিনি বলেন, “অফিস থেকে ফোন দিয়ে আমাকে বলছে, সাবিনা জানি না তুমি কিভাবে আসবে, দুই তারিখ অফিস খোলা, তোমাগো উপস্থিত থাকতেই হবে।””আমি বলছি, গাড়ি-ঘোড়া তো চলে না, আমি আপ্রাণ চেষ্টা করতেছি, যদি ট্রাক অথবা গাড়ি পাই, যেভাবেই হোক আমি চলে আসবো। এজন্যই চলে আসছি চাকরি করার জন্য।”

সাবিনাদের মতো দিনাজপুর থেকে আরো এসেছেন মাসুদা, পাবনা থেকে রাকিব হাসান, ফরিদপুর থেকে রুনা এবং মোহাম্মদ আনোয়ার। গণপরিবহন চালুর অনুমোদন দেয়ায় কেউ কেউ সরাসরি বাসে করে আসলেও বেশিরভাগই এসেছেন ভেঙ্গে ভেঙ্গে, একাধিকবার গাড়ি বদল করে।নিজের দুই আত্মীয়ের সাথে ফিরেছেন রংপুরের আনজু আক্তার। এই পোশাক শ্রমিক জানান, কিছু পথ মাইক্রোবাস, তারপর বাস আর কিছু পথ হেঁটে এসেছেন তারা।তিনি বলেন, “অনেক জার্নি করে আসতেছি। মাইক্রোতে আসছি, নামায় দিছে চান্দোরা, চান্দোরা থেকে আসতেছি।”তৈরি পোশাক শ্রমিকদের পাশাপাশি নির্মাণ শ্রমিকসহ অন্য খাতের শ্রমিকদেরও রাজধানীতে ফিরতে দেখা গেছে রবিবার।

তবে শ্রমিকদের কাজে যোগ দিতে চাপ দেয়ার কথা আগেই অস্বীকার করেছেন পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর ভাইস প্রেসিডেন্ট শহীদুল্লাহ আজিম।দাবী করেন, ঢাকার বাইরে থাকা শ্রমিকদের জানানো হয়েছে যে, তারা যখন আসবে তখন থেকেই তাদের চাকরি থাকবে।শিল্প-কারখানা খোলার শর্তে সরকার বলেছিল যে, ঢাকা এবং এর আশেপাশে থাকা শ্রমিকদের নিয়ে সীমিত পরিসরে কারখানা চালু রাখতে হবে। তবে সেই শর্ত তো মানা হয়নি, উল্টো সারা দেশ থেকে শ্রমিকসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ ঢাকার পথে পাড়ি জমাতে থাকায় চলমান লকডাউন ব্যাপকভাবে বিঘ্নিত হয়েছে।জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, বড় কারখানাগুলো শর্ত মানলেও ছোট ছোট কিছু কারখানা হয়তো শর্ত রাখতে পারেনি।

আর সবাইকে কাজে যোগ দিতে হবে-এমন গুজব ছড়ানোর কারণেও শ্রমিকরা ঢাকামুখী হয়ে থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।রোববার দুপুর ১২টা পর্যন্ত লঞ্চ চালুর অনুমতি থাকলেও পরে সেই সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, শ্রমিক-কর্মচারীদের অনুপস্থিতির কারণে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ যাত্রী পরিবহন সংস্থার জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান বদিউজ্জামান বাদল জানিয়েছেন, সোমবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত বিভিন্ন জেলা থেকে লঞ্চ চলবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2015 teamreportbd
কারিগরি সহযোগিতায়: Freelancer Zone
freelancerzone