বাংলাদেশে প্রায় দুই মাস বিরতির পর আবারো করোনাভাইরাস প্রতিরোধী অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেয়া শুরু হবে সোমবার থেকে।বাংলাদেশে ১৫ লাখ ২১ হাজারের বেশি মানুষ অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার দ্বিতীয় ডোজের জন্য অপেক্ষা করছেন। ভারত থেকে কোভিশিল্ড নামে পরিচিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার রপ্তানি বন্ধ করে দেয়ায় বাংলাদেশে এর মজুদ শেষ হয়ে যায়। এ কারণে দ্বিতীয় ডোজ দিতে পারেননি এই বিশাল সংখ্যক মানুষ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালকদের একজন ডা. মোঃ শামসুল হক সাপ্তাহিক স্বাস্থ্য বুলেটিনে জানিয়েছেন কাল অগাস্টের দুই তারিখ থেকে শুরুতে ঢাকা শহর এবং ঢাকা বিভাগের সকল জেলায় দ্বিতীয় ডোজ দেয়া শুরু হবে।অগাস্টের সাত তারিখ থেকে সারা দেশে দ্বিতীয় ডোজ দেয়া শুরু হবে বলে তিনি জানান।
যারা সেই তালিকায় রয়েছেন তাদের প্রথম ডোজ যে কেন্দ্র থেকে নিয়েছেন সেখানে গিয়েই দ্বিতীয় ডোজ নিতে হবে।যারা দ্বিতীয় ডোজ নেবার জন্য এসএমএস পেয়েছেন তাদের নতুন করে মেসেজের জন্য অপেক্ষা করতে হবে না। আগের বার্তাটি দেখিয়েই তারা দ্বিতীয় ডোজ নিতে পারবেন।সাথে করে প্রথম ডোজ নেবার জন্য যে কার্ডটি ছিল সেটি নিয়ে যেতে হবে।যারা দ্বিতীয় ডোজ নেবেন তাদের জন্য কেন্দ্রে আলাদা এলাকা চিহ্নিত থাকবে।দ্বিতীয় ডোজ হিসেবে অন্য কোন টিকা না নেবার ব্যাপারে সতর্ক করে দেন সামসুল হক।
টিকা কর্মসূচীর শুরুতে বাংলাদেশে ৮ সপ্তাহ বিরতিতে দ্বিতীয় ডোজ দেয়া হয়েছে।তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায় যে এটি ১২ সপ্তাহের বিরতিতেও নিলে কার্যকর হবে।তবে টিকার ডোজ কমে আসার পর বাংলাদেশে এক পর্যায়ে ১৬ সপ্তাহ পর দ্বিতীয় ডোজ দেবার বিষয়ে চিন্তা করা হয়।তবে ১৬ সপ্তাহ পরে দ্বিতীয় ডোজ নিলে এর কার্যকারিতা কতটা হবে, সে ব্যাপারে তেমন কোন তথ্য দিতে পারেনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশে এবছরের জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে প্রথম দফায় ভারত থেকে সিরাম ইন্সটিটিউটের উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা আসা শুরু হয়।ভারতের উপহার হিসেবে শুরুতে ২০ লাখ ডোজের চালান পৌছায়।এরপর সিরাম ইন্সটিটিউটের কাছ থেকে বাংলাদেশ সরকারের কেনা তিন কোটি ডোজের মধ্যে প্রথম চালানে ৫০ লাখ ডোজ সহ ৭০ লাখ ডোজ হাতে নিয়ে দেশব্যাপী করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয় ফেব্রুয়ারির ৭ তারিখ থেকে।কিন্তু সিরাম ইন্সটিটিউট নতুন করে আর কোন টিকা না পাঠানোর কারণে প্রথম ডোজ অ্যাস্ট্রাজেনেকা নেয়ার পর সবার জন্যে দ্বিতীয় ডোজের যোগানে ঘাটতি দেখা দেয়।
এপ্রিল মাসের ২৬ তারিখ থেকে কোভিশিল্ডের প্রথম ডোজ টিকা দেয়া স্থগিত করে দেয়া হয়। মে মাসে টিকার জন্য নতুন নিবন্ধন বন্ধ করে দেয়া হয়।মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে প্রথম ডোজ গ্রহণকারী প্রায় ১৫ লাখ মানুষের দ্বিতীয় পাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়ে এবং এখনো লম্বা সময় পার হয়ে গেলেও তারা দ্বিতীয় ডোজ পাননি।করোনাভাইরাসের টিকা বিতরণে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্যোগ কোভ্যাক্সের মাধ্যমে জাপান থেকে জুলাই মাসের ২৪ তারিখ অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রায় আড়াই লাখ ডোজ দেশে পৌছায়।শামসুল হক জানিয়েছেন এই ডোজগুলি ইতিমধ্যেই ঢাকা শহর ও ঢাকা বিভাগের সকল জেলায় বিতরণ করা হয়েছে।
সবমিলিয়ে ১৬ লাখ ডোজ জাপানের কাছ থেকে আসবে বলে তিনি জানান।তার দেয়া তথ্য মতে এখন সবমিলিয়ে জাপানের দেয়া ১০ লাখ ২৬ হাজারের বেশি ডোজ অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা বাংলাদেশের হাতে রয়েছে।অগাস্টের তিন তারিখ মধ্যে আরও ছয় লাখ টিকা পৌঁছাবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এই কর্মকর্তা।