করোনার দুই নতুন প্রজাতি ছড়িয়ে বিশ্বের অনেক দেশে ছড়িয়ে পড়ার পর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, হু বলছে করোনাভাইরাসের সুপার স্প্রেডার এই স্ট্রেইন খুব দ্রুত সংক্রমণ ছড়াতে পারে। টাইমস অব ইন্ডিয়া
হু’র প্রধান টেড্রস আধানম ঘেব্রেইসাস বলছেন, ব্রিটেন থেকে ছড়ানো বি.১.১.৭ স্ট্রেন ৭০ শতাংশ দ্রুত গতিতে মানুষের শরীরে ছড়াতে পারে। লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিনের সেন্টার ফর ম্যাথেমেটিক্যাল মডেলিং নিয়ে এক প্রতিবেদনে বলছে নতুন স্ট্রেইন যদি বেশি মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে, তাহলে সংক্রমণে মৃত্যু বাড়বে, পাশাপাশি সংক্রমণজনিত জটিল রোগও ছড়াবে। হাসপাতাল-নার্সিংহোমগুলিতে রোগীর ভিড় আরও বাড়বে। হু জানাচ্ছে, এক সপ্তাহে অন্তত ১০টি দেশে ব্রিটেন স্ট্রেইন ছড়িয়ে পড়ার খবর মিলেছে। সায়েন্স জার্নাল
স্পেনে গত অক্টোবরেই ছড়িয়েছিল এই নতুন ভাইরাল স্ট্রেইন। স্পেনের কোনও ফার্ম থেকে এই ভাইরাল স্ট্রেইন ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে। ডেনমার্কে গত মাসে লক্ষাধিক মিঙ্ক জাতীয় প্রাণীকে মেরে ফেলে হয়েছিল অনেকটা এই কারণেই। মিঙ্ক বা বেজি জাতীয় ওই প্রাণীদের শরীরে ভাইরাসের নতুন স্ট্রেইন খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল।
ব্রিটেন থেকে করোনার ছোঁয়াচে স্ট্রেইন ছড়াচ্ছে এমন খবর মেলার পরেই সীমান্ত বন্ধ করে দেয় অনেক দেশই। ব্রিটেনের সঙ্গে বিমান যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু এর পরেও নতুন স্ট্রেইনের সংক্রমণ রোখা যায়নি। ভারতে এখনই একশোর বেশি ব্রিটেন ফেরত মানুষজনের শরীরে নতুন ছোঁয়াচে স্ট্রেইন শনাক্ত করা হয়েছে। জাপান জানিয়েছে, সে দেশেও এই নতুন স্ট্রেইন ঢুকে পড়েছে আশ্চর্যজনকভাবে, অথচ সাম্প্রতিক সময় ব্রিটেন ঘুরে আসার ইতিহাস নেই কারও।
হু বলছে, গত এক সপ্তাহের মধ্যে আটটি দেশে দক্ষিণ আফ্রিকার মিউট্যান্ট স্ট্রেইনও খুঁজে পাওয়া গেছে। এখন ৩১টি দেশে করোনার এই নতুন প্রজাতি ‘৫০১.ভি২’। সার্স-কভ-২ ভাইরাসের এই নয়া ভ্যারিয়ান্ট ব্রিটেন স্ট্রেনের চেয়েও বেশি ছোঁয়াচে বলে দাবি বিজ্ঞানীদের।
খুব দ্রুত বিভাজিত হওয়ার ক্ষমতা আছে এই নতুন ভাইরাল স্ট্রেইনের। জিনগত বদলে এই স্ট্রেইন আরও বেশি সংক্রামক। স্পাইক প্রোটিনের আকারই বদলে দিয়েছে এই নয়া ভ্যারিয়ান্ট। চটজলদি দেহকোষের রিপেসটর প্রোটিনগুলোকে চিহ্নিত করে ফেলতে পারে ভাইরাস। তখন আর শুধু ফুসফুস নয়, শরীরে নানা অঙ্গেই সংক্রমণ ছড়াতে পারে খুব দ্রুত। বিভাজিত হওয়ার বা প্রতিলিপি তৈরির ক্ষমতাও বেড়ে যায় ভাইরাসের।