এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থনীতি করোনা মহামারির কারণে মন্দায় পড়লেও বাংলাদেশের অর্থনীতি আবারও ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। অর্থনীতি পুনরুদ্ধার প্রকল্পগুলোর দ্রুত বাস্তবায়ন, সরকারের দূরদর্শী ব্যবস্থাপনার ফলে এগিয়ে যাচ্ছে দেশটি- এমনটাই বলছে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি)।
সংস্থাটির দাবি, সাম্প্রতিক রপ্তানি আয় ও রেমিটেন্সের পাশাপাশি অথনৈতিক উদ্দীপনা ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য বিদেশি তহবিলসহ সরকারের মাইক্রোইকোনোমিক ব্যবস্থাপনার কারণেই মূলত এই অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার সম্ভব হয়েছে।
এডিবি’র এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক (এডিও) ২০২০ এর সর্বশেষ প্রতিবেদনটি মঙ্গলবার প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে করোনাকালে সরকারের কিছু দূরদর্শী ও বিচক্ষণ সিদ্ধান্তের প্রশংসা করা হয়েছে। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, আগামী (২০২১) অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি ৬.৮ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। সংস্থাটির কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ বলেছেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি এই মহামারি থেকে পুনরুদ্ধার হতে শুরু করেছে। করোনাকালে স্বাস্থ্য ও মহামারি ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির ওপর ব্যাপক চাপ সত্ত্বেও যথাযথ অর্থনৈতিক পদক্ষেপ ও সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের (প্রণোদনা) মাধ্যমে দরিদ্র ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠির মৌলিক চাহিদা পূরণ এবং মৌলিক সেবাসমূহ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী নিশ্চিতের মাধ্যমে সরকার অর্থনৈতিক চাপ সামাল দিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা রপ্তানি ও রেমিটেন্স প্রবাহ বৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে আশাবাদী যে, শিগগিরই এটি টেকসইভাবে ঘুরে দাঁড়াবে। দ্রুত করোনার ভ্যাকসিন পেলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা এই মহামারি মোকাবেলা করে দেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে বড় ভূমিকা রাখতে পারবে।’
তবে আন্তর্জাতিক এই সংস্থাটি বাংলাদেশে দীর্ঘকালীন মহামারি ও এর ফলে রপ্তানি আদেশ স্থগিত বা বাতিল হওয়া প্রধান ঝুঁকি হিসেবে মনে করছে। সংস্থাটির এই কান্ট্রি ডিরেক্টর বলেছেন, সম্পদ আহরণ, রপ্তানি বৈচিত্রকরণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দক্ষতা উন্নয়নের জন্য সরকারকে আরও সহায়তা দেবে এডিবি।
এডিবি বাংলাদেশে ৫.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ দিয়েছে এবং ২০২১-২০২৩ সালের জন্য আরও ৫.২ বিলিন মার্কিন ডলার প্রস্তুত রেখেছে। বাংলাদেশের সঙ্গে ৪৭ বছরের অংশীদারিত্বে এডিবিসহ অর্থায়ন, জনসেবা এবং বাংলাদেশের মানুষের সামাজিক অর্থনৈতিক উন্নয়নসহ বিভিন্ন প্রকল্পে ৩৬.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি ঋণ দিয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশে ৪৯টি প্রকল্পে এডিবির প্রায় ১১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পোর্টফোলিও রয়েছে।