বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অন্যায়ভাবে কারাগারে ৩হাজার ৫৩ দিন আটকে রাখায় কারা কর্তৃপক্ষ দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমা প্রার্থনা করে পোষ্টার করেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তা ছড়িয়ে পড়েছে। কারা কর্তৃপক্ষ বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছে।
পোষ্টারে প্রথমে লেখা রয়েছে, বঙ্গবন্ধু চেয়ে দেখ সোনার বাংলা তোমার, কারাগারে বইছে এখন সংশোধনের জোয়ার। এরপর রয়েছে, শোকের এই দিনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যবৃন্দের শাহাদাত বরণে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যবৃন্দের খুনিদের ফাঁসির রায় কার্যকর করে দেশকে কলঙ্কমুক্ত করতে পেরে আমরা গর্বিত।
ক্ষমা প্রার্থনা : বাংলাদেশের মানুষের ন্যায্য অধিকার আদায়ের সংগ্রামকে দমিয়ে রাখার জন্য হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ৩০৫৩ দিন অন্যায়ভাবে কারাবন্দি রাখার জন্য মুজিব বর্ষে স্বাধীনতার মহাকব্যের রচয়িতা চিরঞ্জীব বঙ্গবন্ধুর কাছে বাংলাদেশ জেল দু:খ প্রকাশ ও ক্ষমা প্রার্থনা করছে।
জানা গেছে, বঙ্গবন্ধু তার রাজনৈতিক জীবনে ৪ হাজার ৬৮২ দিন কারাভোগ করেছেন। এর মধ্যে স্কুলের ছাত্র অবস্থায় ব্রিটিশ আমলে সাত দিন কারা ভোগ করেন। বাকি ৪ হাজার ৬৭৫ দিন তিনি কারাভোগ করেন পাকিস্তান সরকারের আমলে।
তিনি ১৯৩৮ সালে প্রথম কারাগারে যান। এরপর ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ থেকে ১৫ মার্চ পর্যন্ত তিনি ৫ দিন কারাগারে ছিলেন। ওই বছর ১১ সেপ্টেম্বর আটক হয়ে মুক্তি পান ১৯৪৯ সালের ২১ জানুয়ারি। এ দফায় তিনি ১৩২ দিন কারাভোগ করেন। এরপর ১৯৪৯ সালের ১৯ এপ্রিল আবারও কারাগারে গিয়ে ৮০ দিন কারাভোগ করে মুক্তি পান ২৮ জুন। ওই দফায় তিনি ২৭ দিন কারাভোগ করেন। একই বছরের ২৫ অক্টোবর থেকে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬৩ দিন এবং ১৯৫০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ১৯৫২ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি টানা ৭৮৭ দিন কারাগারে ছিলেন।
১৯৫৪ সালের নির্বাচনে জয়লাভের পরও বঙ্গবন্ধুকে কারাগারে যেতে হয়। সে সময়ে বঙ্গবন্ধু ২০৬ দিন কারা ভোগ করেন। ১৯৫৮ সালে আইয়ুব খান সামরিক আইন জারির পর বঙ্গবন্ধু ১১ অক্টোবর গ্রেপ্তার হন। এ সময়ে টানা ১ হাজার ১৫৩ দিন তাকে কারাগারে কাটাতে হয়। এরপর ১৯৬২ সালের ৬ জানুয়ারি আবারও গ্রেপ্তার হয়ে মুক্তি পান ওই বছরের ১৮ জুন। এ দফায় তিনি কারাভোগ করেন ১৫৮ দিন। এরপর ১৯৬৪ ও ১৯৬৫ সালে বিভিন্ন মেয়াদে তিনি ৬৬৫ দিন কারাগারে ছিলেন।
ছয় দফা দেওয়ার পর জাতির পিতা যেখানে সমাবেশ করতে গেছেন, সেখানেই গ্রেপ্তার হয়েছেন। ওই সময়ে তিনি ৩২টি জনসভা করে বিভিন্ন মেয়াদে ৯০ দিন কারাভোগ করেন। এরপর ৬৬ সালের ৮ মে আবারও গ্রেপ্তার হয়ে ১৯৬৯ সালের ২২ ফেব্রæয়ারি গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে মুক্তি পান। এ সময় তিনি ১ হাজার ২১ দিন কারাগারে ছিলেন। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার পরপরই পাকিস্তান সরকার তাকে গ্রেপ্তার করে। এ দফায় তিনি কারাগারে ছিলেন ২৮৮ দিন। সম্পাদনা : খালিদ আহমেদ