ইসরায়েলের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক স্থাপনে চতুর্থ আরব দেশ হিসেবে চুক্তিতে পৌঁছেছে বাহরাইন। চুক্তির পর উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। আর এই চুক্তিকে ঐতিহাসিক হিসেবে উল্লেখ করেছে বাহরাইন। বাহরাইনের এই চুক্তিতে ক্ষুব্ধ ফিলিস্তিন।
শুক্রবার বাহরাইন-ইসরায়েলের চুক্তির ঘোষণা দিয়ে এই ঘটনাকে অকল্পনীয় বলে উল্লেখ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুক্রবার ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে বাহরাইন চুক্তি করেছে বলে ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এটিকে বিরাট সাফল্য হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি। ট্রাম্প বলেন, ৩০ দিনের মধ্যে দ্বিতীয় আরব দেশ হিসেবে বাহরাইন ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তি প্রতিষ্ঠায় একাত্ম হলো। খবর বিবিসি ও আল জাজিরার।
১৫ সেপ্টেম্বর হোয়াইট হাউসে আমিরাত-ইসরায়েলের চুক্তির অনুষ্ঠানে বাহরাইনও অংশগ্রহণ করবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। বাহরাইন-ইসরায়েলের চুক্তিকে অকল্পনীয় উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, এটি এত তাড়াতাড়ি ঘটবে তা কল্পনায়ও ছিল না।
একটি যৌথ বিবৃতিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, বাহরাইন ও ইসরায়েল বলেছে যে, শুক্রবার ট্রাম্প ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং বাহরাইনের বাদশাহ হামাদ বিন ইসা আল খলিফার সঙ্গে কথা বলার পর এই চুক্তি হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির জন্য এটি আরও একটি ঐতিহাসিক অগ্রগতি। চুক্তি এই অঞ্চলে স্থিতিশীলতা, সুরক্ষা এবং সমৃদ্ধি বাড়িয়ে তুলবে।
কয়েক দশক ধরে বেশিরভাগ আরব রাষ্ট্রগুলো ফিলিস্তিনের বিরোধ নিষ্পত্তি হওয়ার পরে কেবল সম্পর্ক স্থাপন করবে বলে ইসরায়েলকে বয়কট করেছে। তবে গত ১৩ আগস্ট ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ঘোষণা দেয় সংযুক্ত আরব আমিরাত।
ট্রাম্পের জামাতা এবং হোয়াইট হাউসের সিনিয়র উপদেষ্টা জ্যারেড কুশনার এই চুক্তিকে ট্রাম্প প্রশাসনের ‘চার বছরের দুর্দান্ত কাজের সমাপ্তি’ হিসাবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা একটি নতুন মধ্যপ্রাচ্যের সূচনা দেখছি’।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, শুক্রবার একটি আরব দেশের সঙ্গে আরেকটি শান্তিচুক্তি হয়েছে বলে তিনি উচ্ছ্বসিত। নেতানিয়াহুর কথায়, ‘এটি শান্তির একটি নতুন যুগ। শান্তির জন্য শান্তি। অর্থনীতির জন্য অর্থনীতি। আমরা বহু বছর ধরে শান্তিতে বিনিয়োগ করেছি এবং এখন শান্তি আমাদের মধ্যে বিনিয়োগ করবে’।
ইসরায়েলের সঙ্গে বাহরাইনের চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, এটি আরেকটি উল্লেখযোগ্য ও ঐতিহাসিক অর্জন, যা এই অঞ্চলকে স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধিতে ব্যাপক অবদান রাখবে।
ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা বাহরাইনের এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাহরাইনে নিযুক্ত তাদের রাষ্ট্রদূতকে পরামর্শের জন্য ডেকে পাঠিয়েছে। এক বিবৃতিতে ফিলিস্তিনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এটি ফিলিস্তিনি জনগণের আবিচ্ছেদ্য জাতীয় অধিকার এবং যৌথ আরব পদক্ষেপের পক্ষে বড় ক্ষতি।
ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিকের ক্ষেত্রে চতুর্থ দেশ বাহরাইন। বাকি তিন দেশ হলো- সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিশর ও জর্দান।