বুধবার, ২২ মার্চ ২০২৩, ০৩:০০ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
বাংলাদেশের প্রথম Smart Village প্রবেশ গেইট এর শুভ উদ্বোধন জাতীয় বীমা দিবসে লক্ষ্মীপুর মার্কেন্টাইল ইসলামী লাইফের মৃত্যুদাবীর চেক প্রদান পবিত্র শবে বরাত ৭ মার্চ করোনাভাইরাস পরিস্থিতি ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত প্রায় এক লাখ, মৃত্যু পৌনে চারশো নিজের নয়, দেশের মানুষের ভাগ্য গড়তে এসেছি: প্রধানমন্ত্রী মিরপুরবাসীর দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান পাখির স্বপ্ন পূরণে পাশে দাঁড়ালেন জেলা প্রশাসক হতাশা ও টাকার জন্য নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেছেন ফারদিন গুজবে কান না দেওয়ার পরামর্শ প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্মীপুর ইউসিসিএল’র সভাপতি ও বিআরডিবি’র কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

মেয়রের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ

বিশেষ প্রতিনিধি: তারেক উদ্দিন জাবেদ
  • Update Time : সোমবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০
  • ৫৮২ Time View

লক্ষ্মীপুর রায়পুর পৌরসভা মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের ১৭ বছর ধরে সম্মেলন না হওয়া মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটির সাধারণ সম্পাদক হাজী ইসমাইল খোকনের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতি, অসদাচরণ, ক্ষমতার অপব্যবহার, স্বেচ্ছাচারিতা, মারমুখী আচরণসহ নানান অভিযোগ উঠেছে।

যানা গেছে দায়িত্ব নেওয়ার মাস ছয়েকের মধ্যেই পূর্ব থেকে অতিরিক্ত জনবল থাকা স্বত্ত্বেও নামে প্রথম শ্রেণীর পৌরসভার জনবল সংখ্যার সুযোগ গ্রহন করে তিনি বিভিন্ন পদে ১৭ জন কর্মচারী নিয়োগ দেন। অভিযোগ রয়েছে জনপ্রতি নূন্যতম ৩ লক্ষ টাকা থেকে শুরু করে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত উৎকোচের বিনিময়ে এসব নিয়োগ দেন মেয়র খোকন। বর্তমানে মেয়াদের শেষ প্রান্তে প্রথম শ্রেণী পৌরসভার বিধি-বিধানের সুবাদে আরো ৬ জন কর্মচারী নিয়োগ দেওয়ার পায়তারা চালাচ্ছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এছাড়া তার একক সিদ্ধান্তের সৈরতান্ত্রিক কর্মকান্ডে কাউন্সিলরদের মাঝেও রয়েছে প্রচুর ক্ষোভ। পৌরসভার বেশীরভাগ টেন্ডার ও কর্মকান্ড সম্পন্ন হচ্ছে তার একক সিদ্ধান্তে। অধিকাংশ কাজই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে সম্পন্ন করে তার ছেলে।

সবশেষ গত ২৩ জুলাই ২০২০ইং তারিখের সাজানো টেন্ডারে পৌরসভার এডিপি’র ফান্ডের ৮০ লক্ষ টাকার ৯টি ওয়ার্ডের ১২টি টেন্ডার কাউকে না জানিয়ে তারই নিজস্ব লোকদের তিনটি প্রতিষ্ঠানের নামে কার্যাদেশ সম্পন্ন করেন। প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে, তারই ঘনিষ্ট সহযোগী দিদার হোসেন দেলুর দিদার এন্ড ব্রাদার্স, নির্বাচনে তার ড্যামি মেয়র প্রার্থী মাইনুল ইসলাম ডালিমের তাহমিনা এন্টারপ্রাইজ ও তার বহুদিনের ঘনিষ্ট সহযোগী বিএনপি নেতা ওহিদ উল্লার ওহিদ এন্টারপ্রাইজ।

এই ১২টি টেন্ডারের একটি মোহাম্মদীয়া হোটেলের সাম্মুখস্থ প্রধান সড়কের পূর্ব পাশর্^স্থ ড্রেন নির্মাণ বেশ কয়েক মাস আগেই সমাপ্ত করেছে মেয়রের ছেলে। টেন্ডারের আরেকটি হোল বৈদ্যুতিক মালামাল ক্রয়। তাও বেশ কয়েকমাস আগেই কেনা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে টেন্ডার কমিটির সভাপতি পেনেল মেয়র কাউন্সিলর কাজী নাজমুল কাাদের গুলজার বলেন, শুনেছি ২৩ জুলাই টেন্ডার জমা হয়েছে। কিন্তু আমি আজ মঙ্গলবার (১১ আগষ্ট ) পর্যন্ত এর কিছুই জানি না। এর আগেও গোপনে সিএনজি স্ট্যান্ডের টেন্ডার হয়েছে সেটাও কেহ জানে না। এক কথায় গত ৫ বৎসরে কোনো টেন্ডারই ওপেন হয় নাই। যার কারনে অনেকেই লাইসেন্স নবায়ন করে নাই। এই ৫ বৎসরের কত টাকার কাজ হয়েছে, কত টাকার ফরম বিক্রয় হয়েছে, আর আগের মেয়রের ৫ বৎসরে কত টাকার কাজে কত টাকার ফরম বিক্রয় হয়েছে, তা তদন্ত করলেই বোঝা যাবে কি রকম দুর্নীতি এই ৫ বৎসরে হয়েছে। প্রথম বছরের পর আজ চার বছর ধরে কোন বাজেট আলোচনা বা ঘোষণা করেননা পৌর মেয়র।

রায়পুর পৌরসভার সাবেক মেয়র ও বিশিষ্ঠ ঠিকাদার রফিকুল হায়দার বাবুল পাঠান বলেন, এই ১২টি কাজের টেন্ডারের বিষয়ে একটা গোপন সংবাদ পেয়েছিলাম, তখন মেয়রকে ফোন দিলে তিনি ফোন না ধরলে আমি আমার ছেলে তার কাছে পাঠাই। আমার ছেলে শিশির এন্টারপ্রাইজের মালিক শিশির পাঠান মেয়রের কাছে গিয়ে কাজের ব্যাপারে আমার কথা বললে মেয়র তাকে পরে জানাবে বলে জানায়। পরে খবর পেলাম মেয়র নিজেই ৩টি প্রতিষ্ঠানের নামে কাজগুলো নিয়েছে।

এরমধ্যে মেইন রোডের ড্রেন আর বিদ্যুতের মালামাল কেনা আগেই শেষ করেছেন মেয়র স্বয়ং। এটা বেআইনী। কম টাকা ও কম লাভের প্রোজেক্টের কাজগুলো মেয়র টেন্ডারে দিত আর বেশী টাকার বেশী লাভের কাজগুলো বিভিন্ন নামে মেয়র নিজেই নেয়। প্রোজেক্টের বিল পেতে বিলম্ব হয় বিধায় প্রোজেক্টের কিছু কাজ মেয়র সাড়ে ৭% অর্থের বিনিময়ে অন্যদের দেয় তবে এডিপি’র ফান্ডের বিল দ্রুত পাওয়া যায় বিধায় এডিপি’র কাজগুলো মেয়র নিজেই নেন। গত পাঁচ বছরের মধ্যে পৌরসভায় আরসিসি রডের বড় কাজগুলো যেমন- মধ্যবাজার, শশানঘাট, নিউ কলোনী, গাজী নগর রোড, মুন্সী বাড়ীর সামনের রাস্তার কাজগুলো মেয়র তার ছেলেকে দিয়ে করিয়েছে। তাছাড়া সরকার কর্তৃক বেআইনী ঘোষিত মিশুক (ব্যাটারী চালিত আটোরিকশা) থেকে প্রতিদিন দশ টাকা হারে টোল নিয়ে আইন বহির্ভুতভাবে মিশুকের বৈধতা দিয়েছে। সিএনজি’র পৌর টোল আদায়ের ইজারা টেন্ডার ছাড়া গোপনে সিএনজি স্ট্যান্ডের ৩টি পয়েন্ট রিংকুকে, ১টি বাবুলকে ও ২টি ডালিমকে দেয়া হয়েছে।

উপজেলা আ’লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ বলেন, মেয়র পৌরসভায় লুটপাট চালাচ্ছে। তেমন কোন উন্নয়নের কাজই হচ্ছেনা পৌরসভায়। রাস্তাঘাটের বেহালদশা, বসবাস অযোগ্য হয়ে পড়ছে রায়পুর পৌরসভা। গরুর বাজারের ডাকও বন্ধ রাখা হয়েছে কয়েক বছর ধরে। ফুটপাতের দোকান থেকে, মালামাল বিক্রয়কারী ভ্যানগাড়ি থেকে অবৈধভাবে প্রতিদিন খাজনা আদায় করছে মেয়র। তিনি সকল বিষয়ে সরকারের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের ও দুদকের তদন্ত প্রত্যাশা করেন।

পৌর মেয়র হাজী ইসমাইল খোকন বলেন, সামনে পৌর সভার নির্বাচন তাই আমার বিরুদ্ধে কিছু কুচক্রী মহল রাজনীতিক প্রতিহিংসা হয়ে আমার সম্মান ক্ষুন্ন করার সার্থে এই গুলো ছড়িয়ে বেড়াচ্ছে,তবে আনিত সব অভিযোগ মিথ্যা, সব কিছুই নিয়মনীতি অনুযায়ী করা হয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2015 teamreportbd
কারিগরি সহযোগিতায়: Freelancer Zone
freelancerzone