মঙ্গলবার, ২১ মার্চ ২০২৩, ১১:৪৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
বাংলাদেশের প্রথম Smart Village প্রবেশ গেইট এর শুভ উদ্বোধন জাতীয় বীমা দিবসে লক্ষ্মীপুর মার্কেন্টাইল ইসলামী লাইফের মৃত্যুদাবীর চেক প্রদান পবিত্র শবে বরাত ৭ মার্চ করোনাভাইরাস পরিস্থিতি ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত প্রায় এক লাখ, মৃত্যু পৌনে চারশো নিজের নয়, দেশের মানুষের ভাগ্য গড়তে এসেছি: প্রধানমন্ত্রী মিরপুরবাসীর দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান পাখির স্বপ্ন পূরণে পাশে দাঁড়ালেন জেলা প্রশাসক হতাশা ও টাকার জন্য নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেছেন ফারদিন গুজবে কান না দেওয়ার পরামর্শ প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্মীপুর ইউসিসিএল’র সভাপতি ও বিআরডিবি’র কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

এবার ময়মনসিংহ বিভাগের এক ডিসির বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারীর অভিযোগ

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ৩ আগস্ট, ২০২০
  • ৩৭১ Time View

জামালপুর, দিনাজপুর জেলা প্রশাসনের (ডিসি) নারী কেলেঙ্কারীর পর এবার ময়মনসিংহ বিভাগের এক ডিসির বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারীর অভিযোগ তুলেছেন তারই সহকর্মী এক নারী কর্মকর্তা (এডিসি)। অভিযোগ, ডিসি বিভিন্নভাবে নিজের ভালোলাগা-ভালোবাসার কথা প্রকাশ করতে গিয়ে একপর্যায়ে সহকর্মীর (নারী কর্মকর্তা) জীবন অতিষ্ঠ করে ফেলেছেন। সংসার পর্যন্ত ভেঙে দিতে বাধ্য করেন। তারপর সব শেষ! পারিবারিক ও সামাজিক মর্যাদা সুরক্ষার কথা চিন্তা করে দীর্ঘদিন বিষয়টি চেপে রাখলেও শেষমেশ ডিসির বিচার দাবি করে জনপ্রশাসন সচিবের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী সাবেক এডিসি নারী কর্মকর্তা, তিনি ২০১৯ সালে বদলি হয়ে নেত্রকোনা জেলা ছেড়েছেন।

ডিসির বিরুদ্ধে গত ৪ মার্চ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিবকে লেখা আবেদনপত্রের এক স্থানে উপসচিব পদমর্যাদার ওই নারী কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, বিভিন্ন সময়ে প্রেম নিবেদন করেন এবং নিজের কষ্টকর দাম্পত্যজীবনের জন্য সহানুভূতি প্রার্থনা করেন তিনি। অনলাইনে, প্রকাশ্যে, জনসম্মুখে একাধিকবার আমাকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলেন। ওনাকে সতর্ক করা সত্ত্বেও উনি বাড়াবাড়ি পর্যায়ে ব্যক্তিগত শালীনতাবোধ অতিক্রম করেন। দায়িত্বশীল আচরণ করতে বলা হলে উনি ক্ষমতার অপব্যবহারপূর্বক নিম্ন স্বাক্ষরকারীকে অন্যায় এবং মিথ্যা শোকজ করেন এবং হুমকি-ধমকি দেয়ায় ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আমি পারিবারিক সহিংসতার শিকার হই। অবমাননাকর পরিস্থিতিতে আমার বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। তার (ডিসি) অমানবিক এবং অসামাজিক আচরণের কারণে আমার জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন এডিসি জেনারেল।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ভুক্তভোগী নারী কর্মকর্তা বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি সাহিত্যে লেখাপড়া করেছি। ইংল্যান্ডেও পড়াশোনা করেছি। আমারও একটা প্রিভিয়াস বেটার ক্যারিয়ার আছে। কিন্তু একবার ভাবুন, আমার জীবন কতটা অতিষ্ঠ হয়ে উঠলে আমি প্রায় দু’বছর পর লিখিত অভিযোগ দিতে বাধ্য হয়েছি।’

 

তিনি বলেন, ‘২০১৮ সালের জুলাই মাস থেকে আমাকে নানাভাবে ডিস্টার্ব করা শুরু করেন। সিনিয়র অফিসার হওয়ার কারণে প্রথমদিকে কৌশলে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করেছি। কিন্তু উনি তো আমার ডিসি স্যার। সরাসরি নিয়ন্ত্রণকারী সিনিয়র অফিসার। যখন-তখন ডেকে পাঠাতেন। কাজ না থাকলেও এক রকম ওনার অফিস কক্ষে আমাকে বসিয়ে রেখে কথা বলতে চাইতেন? সব বলতে চাই না। বহুবার তাকে শৃঙ্খলা ও শালীনতাবোধ অতিক্রম করতে নিষেধ করেছি। কিন্তু তিনি শুনতেন না। বদলি হতেও চেষ্টা করেছি। কিন্তু তার কারণে বদলি হতে পারিনি। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাফ জানিয়ে দিতেন, আমি খুব ভালো অফিসার। জেলার শিক্ষার মানোন্নয়নে আমাকে খুব বেশি প্রয়োজন। বদলি করা যাবে না। কিন্তু যখন দেখলাম, তার কারণে আমার সংসার টেকানোই কঠিন হয়ে পড়েছে আমার স্বামী সেই জেলার এডিসি জেনারেল ছিল? তখন বাধ্য হয়ে বিভাগীয় কমিশনারসহ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কয়েকজন সিনিয়র অফিসারের কাছে মৌখিক অভিযোগ দিয়েছি। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি বরং সেটি জানার পর তিনি আমাকে শোকজ করে মানসিকভাবে আরও বিপর্যস্ত করে ফেলেন।’

ভুক্তভোগী কর্মকর্তা আরও বলেন,‘তার কারণে শেষ পর্যন্ত আমার সংসার ভেঙে গেল। চরম বিপর্যয় মাথায় নিয়ে বদলি হয়ে গত বছর জানুয়ারি মাসে সন্তানসহ ঢাকায় চলে আসি। ৭-৮ মাস তো ভীষণ ট্রমার মধ্য দিয়ে গেছি। এখনও সারাক্ষণ আমি বিষময় জীবন পার করছি। ঢাকায় এসে গত এক বছর সন্তান নিয়ে সীমাহীন কষ্ট করেছি, যা জীবনে কোনদিন করিনি। এর মধ্যে আমি পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের সুযোগও হাতছাড়া করে ফেলেছি। শুধু ওনার কারণেই? সবই হারিয়ে ফেলেছি। সুন্দর, সাজানো-গোছানো সংসার সব শেষ। এখন সন্তান আর চাকরিটা নিয়ে আছি। সিনিয়র স্যাররা নিশ্চয়ই সবদিক বিচার-বিশ্লেষণ করে আমার প্রতি ন্যায়বিচার করবেন। যাতে ভবিষ্যতে কোনো নারী কর্মকর্তাকে আমার মতো এভাবে নির্যাতিত ও ক্ষতিগ্রস্ত হতে না হয়।’

অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত ৪ মার্চ ডিসির বিরুদ্ধে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিবকে লেখা আবেদনপত্রের এক স্থানে উপসচিব পদমর্যাদার ওই নারী কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, তার (ডিসি) অমানবিক এবং অসামাজিক আচরণের কারণে আমার জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘এ পরিস্থিতিতে আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ফেলোশিপপ্রাপ্ত হয়েও উচ্চশিক্ষা গ্রহণে অপরাগ হই। অপরদিকে গত ১৫ মার্চ ডিসির বিরুদ্ধে অভিযোগকারী নারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও পাল্টা অভিযোগ এনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বরাবর লিখিত দেন।’

এ বিষয়ে ময়মনসিংহের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) নিরঞ্জন দেবনাথ বলেন, বিষয়টি তদন্ত পর্যায়ে আছে। এ মুহূর্তে কোনো মন্তব্য করা সমীচীন হবে না। ভিকটিম সাক্ষী হিসেবে ১২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর নাম-পরিচয় উল্লেখ করেছেন। করোনার কারণে তাদের সাক্ষ্য নিতে একটু বিলম্ব হচ্ছে। এ সপ্তাহের মধ্যে তাদের বক্তব্য নেয়া হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2015 teamreportbd
কারিগরি সহযোগিতায়: Freelancer Zone
freelancerzone