লক্ষ্মীপুরের জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নূর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন, রায়পুর উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কাজী মো. জামশেদ কবির বাকীবিল্লাহ, জেলা যুবলীগের সভাপতি একেএম সালাউদ্দিন টিপু ও জেলা পরিষদের সদস্য শাখাওয়াত হোসেন আরিফসহ অনেক প্রভাবশালী নেতার ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করে চিঠি দিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আজ ৮ সেপ্টেম্বর ৯ সেপ্টেম্বর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করে কর্মকর্তা ও উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দিন। রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে হাজির হতে বলা হয়েছে।
লক্ষ্মীপুরে বিদেশে যাওয়ার আগে ছিলেন নিঃস্ব আদম ব্যবসায় ভাগ্য পরিবর্তন এখন স্বামী-স্ত্রী দুজনই সাংসদ। তিনি নির্বাচিত আর তাঁর স্ত্রী সেলিনা ইসলাম সংরক্ষিত আসনের সাংসদ।
অ্যাডভোকেট নূর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন : ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লক্ষ্মীপুর সফরের সময় জনসভার মঞ্চে ওঠা নেতাদের মধ্যে পাপুল। অভিযোগ রয়েছে, দুই কোটি টাকার বিনিময়ে নয়ন পাপুলকে মঞ্চে তুলেছিলেন। এবং জাতীয় পার্টির নোমানকে আট কোটি টাকা দিয়ে বসিয়ে দেন। এ ক্ষেত্রেও প্রত্যক্ষ ভূমিকা রেখেছিলেন নয়ন। নির্বাচনে জেতানোর জন্য পাপুলের কাছ থেকে নয়ন দ্বিতীয় দফায় আরও ছয় কোটি টাকা নেন বলেও জানা গেছে।
লক্ষ্মীপুর জেলা যুবলীগের সভাপতি একেএম সালাউদ্দিন টিপু পাপুলের কাছ থেকে প্রায় দুই কোটি টাকা নেন। পাপুল তাকে একটি হ্যারিয়ার ব্র্যান্ডের জিপও কিনে দেন।
কাজী মো. জামশেদ কবির বাকীবিল্লাহ : রায়পুর উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক সে সময় পাপুলের কাছ থেকে তিনি বিপুল আর্থিক সুবিধা নেন বলে জানা গেছে। পাপুল সাংসদ নির্বাচিত হয়ে এই বাকীবিল্লাহকেই তার স্থানীয় রাজনৈতিক প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ দেন। বাকীবিল্লাহ পাপুলের ছত্রছায়ায় রায়পুর উপজেলার সিএনজি স্টেশন ও অটোরিকশা চালকদের কাছ থেকে চাঁদা বাবদ প্রায় ২৪ কোটি টাকা হাতিয়ে নেন।
শাখাওয়াত হোসেন আরিফ : একসময় থাই গ্লাসের মেকানিক হিসেবে কাজ করতেন লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের সদস্য শাখাওয়াত হোসেন আরিফ। বর্তমানে তিনি শতকোটি টাকার মালিক। গত বছর পাপুলের প্রত্যক্ষ সহায়তায় বিনা টেন্ডারে ১০৬ কোটি টাকার ঠিকাদারি কাজ পান আরিফ। জেলা পরিষদের সদস্য হয়ে প্রভাব খাটিয়ে আরিফ ২০১৮ সাল থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ঠিকাদারি কাজ নিয়ে ওইসব কাজ বাস্তবায়ন না করেই ভুয়া বিলে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।
সাংসদ পাপুলের বিরুদ্ধে দুদকে পেশ করা অভিযোগে বলা হয়, পাপুল কুয়েতে মানব পাচার করে প্রায় এক হাজার ৪০০ কোটি টাকা অবৈধভাবে অর্জন করেছেন। হুন্ডি ও ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের ব্যাংক হিসাব ব্যবহার করে ২০১৬ সালে বিদেশ থেকে ২৮০ কোটি টাকা দেশে এনেছেন পাপুল। দুদকের অনুসন্ধানে পাপুল, তার স্ত্রী সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি কাজী সেলিনা ইসলাম, বড় মেয়ে ওয়াফা ইসলাম ও শ্যালিকা জেসমিন প্রধানের নামে বিপুল পরিমাণ স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ পাওয়া গেছে। ওইসব সম্পদের বৈধ উৎস খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এবিষয়ে তাদের দাবি আওয়ামী লীগ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লক্ষ্মীপুর-২ আসনটি জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ নোমানকে ছেড়ে দিয়েছিল। কিন্তু ভোটের ৯ দিন আগে তিনি নিষ্ক্রিয় হয়ে যান। তখন জোট নেতাদের নির্দেশে আমরা স্বতন্ত্র প্রার্থী কাজী শহিদ ইসলামের জন্য কাজ করি। এমপি হওয়ার জন্য কোটি কোটি টাকা খরচ করেছেন শহিদ। এমপি হওয়ার পর তাঁর সঙ্গে আমাদের বনিবনা আর হচ্ছে না।